Forum
24
bd

















1. First of all registration here 2. Then Click on Be a trainer or writer button 3. Collect your trainer or writer id card from trainer master 4. And create post here for earn money! 5. For trainer 100 tk minimum withdraw 6. For writer 500 tk minimum withdraw 7. Payment method Bkash Only
obaydulbc obaydulbc
Trainer

2 years ago
obaydulbc

বাংলা গল্প বউ ডুবির কথা ৩



নতুন বউ এক মাথা ঘোমটা দিয়ে খুব ধীর পায়ে বারান্দা থেকে তিন ধাপ
সিঁড়ি দিয়ে উঠোনে নেমে এল। আজকাল তার চলা ফেরার সময় সবি
ঝি সর্বক্ষন তার হাতের কনুইয়ের কাছে চেপে ধরে থাকে।
দিদি শাশুড়ী তাকে মৃদু ধমকে উঠল, " কবরেজ মশাইয়ের কথা মনে
নেই বউ? ঘোমটা তোল, বুক ভরে নিঃশ্বেস নাও বাপু। এই মেয়ে মহলে
তোমাকে আর লজ্জা দেখাতে হবে নে। পেটেরটার কথা আগে ভাব।
সোনা রঙের মিহি সুতোয় বোনা চওড়া লালের ওপর সোনালী জড়ির
কল্কা পাড়ের শাড়ির ঘোমটা সিঁথির ওপর তুলে দিল কুসুমকুমারী। অল্প
কোঁকড়ানো ঘন কালো চুলের মাঝে সরু সিঁথিটুকু গাঢ় লাল সিঁদুরে
ঢাকা।
গোলাপী মুখের ওপর টিকলো নাকে আজ একখানি হীরের নাকছাবি
ঝকঝক করছে। ধনুকের মতো বাঁকা ভ্রুর মাঝে এয়োস্ত্রী চিহ্ন স্বরূপ
টুকটুকে লাল সিঁদুরের টিপ জ্বলজ্বল করছে। বড় বড় টানা টানা চোখে
ছেলেমানুষের সারল্য ফুটে আছে। অপরূপ ঠোঁটের পাশে ছোট্ট একটা
কালো তিল। ওর মনে এখনো যৌবন আসেনি বলে চোখ দুটিতে রূপের
গরিমা ফুটে ওঠেনি। লাল পেড়ে সোনা রঙা শাড়ীতে রূপে যেন স্বয়ং মা
লক্ষী, শুধু ঘট আর পেঁচা খানাই যা নেই। কিন্তু দৃষ্টি দেখে মনে হয় কোন
চপল চঞ্চল গ্রাম্য বালিকা সখীদের সঙ্গে খেলছিল, মায়ের ডাকে ভয়ে
ভয়ে খেলা ফেলে উঠে এসেছে।
উঠোনে উপস্থিত সবাই অবাক হয়ে নতুন বউয়ের রূপ দেখছিল,
এমনকি রতনমণি পর্যন্ত।
সবি ঝি অতি সাবধানে সিঁড়ি দিয়ে নামিয়ে এনে একটা উঁচু জলচৌকি
এগিয়ে হাত ধরে নতুন বউকে বসিয়ে দিল। রতনমণির চুল বাঁধা হয়ে
গিয়েছে, নাপিত বউ আলতা পরানো শুরু করতে যাবে এমন সময়
নিস্তারিণী বললেন "বিমল আগে বউকে আলতা পরা, খোঁপা বাঁধ।"
এমনিতে জমিদারের মেয়ে রতনমণি বেশ কলহ প্রিয়া। অন্য কেউ যদি
তার কাজ আটকে এমন আদেশ করত তার কপালে আজ দুঃখ ছিল।

আসলে এ বাড়িতে নিস্তারিণী আর রতনের মা ছাড়া তৃতীয় কেউ নেই যে
এমন কাজ করতে পারে। সে যে নীলমণির মেয়ে সেটা সে ভাল ভাবেই
মনে রাখে এবং সবার সঙ্গে ব্যবহার সেই রকমই করে। বাপের মতোই
তাকে ঘিরে থাকা চাটুকারেরও অভাব নেই। বয়স কম হলে কী হবে
বড়দের কাছ থেকে শেখা অন্তর জ্বলিয়ে দেওয়া কথার ভান্ডার তারও
কিছু কম নয়। বিশেষ করে নিজের সহোদরার সঙ্গে তার ঝগড়া বিবাদ
লেগেই থাকতো। তাদের দুজনের শ্বশুর বাড়িই বেশ অবস্থাপন্ন কিন্তু
তবুও নীলমণির বড় মেয়ে রতন বাপের ঘরে পড়ে থাকে। কোন পালা
পার্বণে শ্বশুর ঘরে অতিথির মতো যায় আবার উৎসব অন্তে ফিরে
আসে। নীলমণির ছোট মেয়ে সোহাগিনী অবশ্য শ্বশুর বাড়িতেই থাকে।
বাপের ঘরে ওদের দাপটের অন্ত নেই, কিন্তু সে যাই হোক এখনকার
মতো রতন মনের উষ্মা চেপে গুম হয়ে থাকল। বাপের সম্পদের গরিমায়
দাম্ভিক হলেও নিস্তারিণীর আদেশ অমান্য করে এমন সাহস তার নেই।
নিস্তারিণী আবার বললেন, "বিমল, তোকে যে বলে ছিলাম সে কথা
খানা মনে আছে? তাকে এনেছিস?"
নাপিত বউ শশব্যাস্তে উঠে দাঁড়িয়ে বলল, "হ্যাঁ গো গিন্নিমা, সে এয়েচে
গো। হুই যে দেক বসে আচে।"
উঠোনের কোনে ভিড় থেকে অনেকটা দূরে আর একটা জল চৌকিতে
এক বিধবা বসে আছে, ছোট করে ছাঁটা চুল, পরনে ধবধবে সাদা থান
পাকা গমের মত তার গায়ের রং, চোখের দৃষ্টি সোজা। গভীর, গম্ভীর
ভাবে নতুন বউকে দেখছে।
নিস্তারিণী আবার বললেন,"সবি, ওকে জল মিষ্টি দেওয়া হয়েছে?"
নাপিত বউ হাঁ হাঁ করে উঠল," না গো গিন্নিমা, মাসি কোতাও কিছু খায়
নে!"
নিস্তারিণী বিরক্ত হলেন, "এ আবার কেমন কথা, অতিথিকে কিছু না
খেতে দিলে গেরস্তের অকল্যাণ হবে যে!"

বিমলা আবার তড়বড় করে বলল,"না গো কত্তা মা, আমার মাসি যে

কারো বাড়ি যায় নে, অন্যের হাতে খায় নে।"

নিস্তারিণী অবাক হলেন। নিচু জাতের ঘরের জন্মানো এই বিধবা উচ্চ

বর্ণের মত এতটা আচার নিষ্ঠ কিভাবে হল! অবশ্য এই লোক তো অন্য

রকম হবেই, সাধিকা মানুষ, এ কপাল দেখে লোকের ভুত ভবিষ্যৎ

বলতে পারে।

কিছুক্ষন চুপ করে থেকে নিস্তারিণী বললেন বিমলের মাসিকে

বললেন,"ও মেয়ে একটু আমার ঘরে এস তো বাপু, তোমার সঙ্গে

গোপনে দুটো কথা আছে। এস আমার সঙ্গে।"

এতক্ষন চুপ করে থাকলেও এবার বিধবা উঠে দাঁড়িয়ে বলল, "কারো

ঘরেও আমি যাই নে কো মা, কারোর হাতে রাঁধা কোন কিছুই খাইনে।

অন্যের দানের সঙ্গে তার অন্তরের ভাল মন্দ দুই ভাবই গ্রহণ করতে হয়।

দান করা সহজ, কিন্তু দান গ্রহণ করা বড়ই কঠিন। মাগো আমি খুব

সামান্য মানুষ, ঈশ্বরের নাম করি। আমার ক্ষমতাও নগন্য, তাই অন্যের

দান এবং অন্ন গ্রহণ করলে অন্যের গৃহে প্রবেশ করলে আমার সাধনার

শক্তি নষ্ট হয়, যা বলার এখানেই এই খোলা আকাশের নিচে বলব।"

নিস্তারিণীকে কথা গুলো বলার পর সেখানে যত মেয়ে বউ ছিল তাদের

উদ্দেশে সে বলল, "এই যে মায়েরা, তোমাদের সবাইকে বলছি। তোমরা

বাপু নিজের নিজের কাজে যাও দেখি, গিন্নিমার সাথে আমার কিছু কথা

আছে, সে সব সবার সামনে কওয়ার মত নয়। যাও তোমরা নিজেদের

ঘরে যাও।"

নিতান্ত বাইরের লোকের এ হেন আদেশে সবাই বেশ হতভম্ব হয়ে গেলেও

নিস্তারিণীর মুখের দিকে চেয়ে আর কিছু না বলে ধীর ধীরে চলে গেল।

বিধবা এগিয়ে এসে নাপিত বৌকেও বলল, "এই মেয়ে, তুইও এখন যা

এখান থেকে।"

বিমলার মনে কৌতুহল হচ্ছিল তার মাসি গিন্নীমাকে কী বলে। একেবারে নিজের বোনঝি হওয়ার সুবাদে এ খবর শোনার অধিকার যেন তার সব
থেকে বেশি। জেদি ঘোড়ার মতো ঘাড় শক্ত করে সে বলল, "আবার
আমি কেন যাব? বা রে! আমি তোমার নিজের নোক নই?"
বিধবা ধমকে উঠল,"গেলি তুই? এখুনি উঠে যা বলছি!"
অগত্যা নাপিত বউ বিমলা বেজার মুখে উঠে গেল।
এতক্ষন কুসুম জল চৌকির ওপর বসে এর ওর মুখের দিকে চাইছিল,
আজকাল তার আর কিছুই ভালো লাগে না। সে বড় লোকের আদরের
মেয়ে, বড় লোকের বউ। বউ আবার কবে আদরের হয়? তবে আদর না
থাক যত্নটা আছে। বিশেষ করে পেটেরটা আসার পর থেকেই দিদি
শাউরি সবি দিদিকে যেন গায়ে সেঁটে দিয়েছেন। সে দিনরাত 'এদিক
যেওনি, ওদিক যেওনি, এলো চুলে মোটে থাকবে নি, সাঁঝ সন্দে কুয়ো
তলায় যাবে নি। ছেঁচ তলায় তোমার গামছাটা আবার কে মেলে দিল?
কার এত সাধ হয়েছে কাজ এগিয়ে আমার উবগার করার? বার বার
বলে রেখেছি নতুন বউয়ের সব ভার গিন্নিমা আমারে দিছেন। তার কোন
জিনিসে কেউ আঙুলটিও ছোঁয়াবে নি। বলি ও বউ,খোঁপায় খড়কে কাঠি
গুঁজেছ না ভুলে গেছ, কোল আঁচলে গিঁট দিয়েছ?', ' বলে টিক টিক
করে বেড়াচ্ছে।
কবরেজের কথা মতো সাত সকালে কর্তাদের জলখাবার পর পরই
তাকে খেতে হয়, দুপুরেও তাই। প্রায় কর্তাদের সঙ্গে সঙ্গেই খেতে বসতে
হয়। সারা শরীরে অস্থির অস্থির ভাব, কোন কিছু রাঁধার গন্ধে গা বমি
বমি,মাথা ঘোরা লেগেই আছে। এখানে থাকতে একটুও ভালো লাগে না।
কবে যে এরা বাপের বাড়ি পাঠাবে! রাত দিন সময় অসময়ে খালি ঘুম
ঘুম ভাব। কবরেজের মানা তাই আসন পিঁড়ি করে বসে না, খাওয়া
দাওয়াও ওই জল চৌকিতে বসে। কত দিন হল একটা কাপড়ে 'পতি
পরম গুরু' নকশা খানি সূঁচে তোলার চেষ্টা করছে কিন্তু শরীর দিচ্ছে না।
এখন আবার কোন মেয়েছেলে গণক্কার দেখতে এসেছে, কবরেজ লক্ষণ
দেখে বলেছে যে ব্যাটা হবে। বোধ হয় আরো নিশ্চিন্দি হতে চায়
দিদিশাউরি। এ কয় মাসের অভ্যেস বসত ঘোমটা একটু টেনে কুসুম


নতুন আগন্তুকের দিকে ভাল করে চেয়ে দেখল। প্রায় মায়ের বয়সী

বিধবা মহিলা এক দৃষ্টিতে তার দিকে চেয়ে আছে। সে যেন চোখ দিয়েই

তার অন্তরের সব কিছু দেখে নিচ্ছে। এই সামান্য কয় বছরের জীবনে

এমন দৃষ্টি আর কারোর দেখেনি। ওর গা টা শিরশির করে কেমন যেন

ভয় ভয় লাগতে শুরু করল।

ক্রমশ






............
পরবর্তী পর্ব পড়ার জন্য এখানে ক্লিক করুন


বউ ডুবির কথা (৪) ............


×

Alert message goes here

Plp file


Category
Utube fair

pixelLab দিয়ে নিজের নাম ডিজাইন ও Mocup

Paid hack

App link topup